ঢাকাFriday , 31 January 2025
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জনপ্রিয় সংবাদ
  9. জাতীয়
  10. বিনোদন
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ক্ষমতাচ্যুত আ’লীগ সরকারের দাপট দেখিয়ে দূর্নীতি করতেন গলা ধরে

admin
January 31, 2025 9:12 am
Link Copied!

 

নিয়াজ মোরশেদ, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট):

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ.ও.ম মোবারক আলী ও সহকারী মৌলভী কামরুল হাসান। অধ্যক্ষকে চেয়ারে বসিয়ে রেখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সকারের দাপুটে অধ্যক্ষের সব কাজ করতে কামরুল হাসান। এজন্য তাকে সবাই ছোট অধ্যক্ষ বলে ডাকতেন। তাঁদের মধ্য মিল অটুট। তাঁদের বিরুদ্ধে এবার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক মনগড়া নিজস্ব সিদ্ধান্ত, নিয়োগ বাণিজ্যসহ প্রতিষ্ঠানে সরকারি বরাদ্দের টাকা কাজ না করে আত্বসাতের অভিযোগে বির্তকে ছিলেন তাঁরা।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে সাবেক জাতীয় সংসদের হুইপ ও জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর) আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সাথে দলীয় সখ্যতার দাপট দেখিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মাদ্রাসায় একক রাজত্ব তৈরি করে গলা ধরে দূর্নীতি করতে তাঁরা। কেউ হিসেব চাইলে দিতেন না তাঁরা। সরকার পতনের পর বেড়িয়ে আসে তাঁদের অনিয়মের চিত্র। এঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন ক্ষমতাবলে ওই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম।

আজকের পত্রিকার অনুসন্ধান ও ভ‚ক্তভোগী শিক্ষকসহ স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে আ.ও.ম মোবারক আলী ও কামরুল হাসান মাদ্রাসার মালামাল ক্রয়ের নামে ভ‚য়া ভাউচারে টাকা তুলে নিজেদের পকেটে রাখতেন। কাগজ কলমে তাঁরা খরচের খাত দেখালেও বাস্তবতায় কোন কিছুই তাঁরা করেননি। মাদ্রাসার আয়ের টাকাসহ সরকারী বরাদ্দের ভ‚য়া ভাউচারে দেখিয়ে আত্বসাৎ করছেন। মাদ্রাসায় লাইব্রেরীয়ান পদে লোক নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা ঘুষ নেন। যোগদানের পর তিনি জানতে পারেন ওই পদে নিয়োগটি আলিম মাদ্রাসার জন্য প্রযোজ্য নয়। এরপর ওই ১২ লাখ টাকা কামরুলের কাছ থেকে ফেরৎ চাইলে মিজানুর রহমানকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দলীয় ভয়ভীতি দেখাতেন কামরুল হাসান। আওয়ামী লীগ সরকারের শ্বাসন আমলে অধ্যক্ষ আ.ও.ম মোবারক আলী ও সহকারী মৌলভী কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে কেউ সাহস করে প্রতিবাদ করে কথা বলতে পারেননি। প্রতিবাদ করলেই তাঁকে চাকুরি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দিতেন কামরুল হাসান। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রমাণসহ তাঁর দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকসহ স্থানীয়রা। এঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএনও’র কাছে একাধিক অভিযোগ দেওয়া হয়।

ভ‚ক্তভোগী মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০১২ সালে আমাকে সহকারী লাইব্রেরীয়ান পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন সহকারী মৌলভী কামরুল হাসান। যোগ দানের পরে আমি জানতে পারি আমার নিয়োগটি ভ‚য়া ছিল। তখন মাদ্রাসায় ওই পদিই ছিল না। তাঁর পরেও আমি অফিসের বিভিন্ন কাজ করতাম। পরবর্তীতে ২০২০ সালের শেষে মাদ্রাসায় সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদ সৃষ্টি হয়। আমি সেই পদেই আজও চাকুরি করে যাচ্ছি। তবে ১২ বছর ধরে ওই পদে চাকুরির একটি টাকাও বেতন পাই না। আবার নিয়োগের সময় যে ১২ লাখ টাকা নিয়েছিল কামরুল সেটিও তিনি ফেরৎ দেননা। বড়ং টাকা চাইলে তিনি বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাতেন।

এরপর থেকে তিনি আমার ঘুষের টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি মামলাসহ বিভিন্ন হুমকি ধুমকি দিতেন তিনি।
প্রভাষক শাহিনুর রহমান বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দাপট দেখিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আ.ও.ম মোবারক আলী ও সহকারী মৌলভী কামরুল হাসান শিক্ষকদের তাঁদের কথা মতো চলতে বাধ্য করাতেন। তাঁরা গলা ধরে দুর্নীতি করতেন। অধ্যক্ষকে চেয়ারে বসিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যসহ টাকা পয়সার সকল কাজ দেখাভাল করতেন সহকারী মৌলভী কামরুল হাসান। দূর্নীতির করাল গ্রাসে তাঁরা প্রতিষ্ঠানটি ধংস করেছে। তাঁরা সরকারী বরাদ্দের টাকায় কাজ না করে তাঁদের পকেটে রেখেছে। আমরা কেউ প্রতিবাদ করলেই চাকুরি খাওয়ার হুমকি দিতেন। তাঁদের অন্যায় অবিচারে আমার ছিলাম অতিষ্ঠ।
অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী মৌলভী কামরুল হাসান বলেন, তিনি যা করেছেন তাঁর কোন প্রমাণ নেই কাগজে কলমে। সব কিছুর দায়ভার অধ্যক্ষ নিবেন। কারন তিনি স্বেচ্ছাচারিতা করে সব করেছিলেন। আমি আওয়ামী লীগকে ভালোবাসলেও দলের কোন প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসায় কোন কিছু করিনি।

অধ্যক্ষ আ.ও.ম মোবারক আলী তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, তিনি সব কাজ আইনগত বিধি মোতাকেব করেছেন। তাই তিনি কারো কাছে হিসেব দিতে বাধ্য নই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আক্কেলপুর সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনজুরুল আলম বলেন, প্রতিষ্ঠানটির দু’জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো মাদ্রাসা বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করেছি। সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে, সে অনুযায়ী বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।