দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মচারী মোঃ কামাল হোসেন আত্মীয় স্বজনদের নামে বে-নামে সম্পদ।
সাঁটলিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারীর লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছেন। অধিদপ্তরের গাড়ি বর্ষ ভাড়ার টেন্ডারে এম এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ মাসুদ রানা গ-২১/১৩, মহাখালী, ঢাকা এর বৈধভাবে কাজ পাওয়ার পরও সুকৌশলে ফাইল আটকিয়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে কার্যাদেশ প্রদান করেন। এম এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক প্রথম মাসের বিল জমা দিলে এই দুর্নীতিবাজ কামাল হোসেন হুমকি দিয়ে বলেন, প্রতি মাসের বিলে ১০ হাজার টাকা না দিলে টেন্ডার বাতিলসহ প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
অভিযোগ আছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে ২০২১ সালে কর্মচারি নিয়োগে জনাব কামাল হোসেন তার আপন ছোট ভাই (রবিন) কে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার জন্য মোটা টাকায় অন্যজনকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে উত্তীর্ণ করায়। পরবর্তীতে নিয়োগ বোর্ডের মৌখিক পরীক্ষায় তার ছোট ভাই (রবিন) অংশগ্রহণ করলে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যগণ ভূয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে বুঝতে পেরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ছোট ভাই (রবিন) স্বীকারোক্তি দেয় যে, জনাব কামাল হোসেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পাওয়ার জন্য সকল ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্যগণ একমত হয়ে গত ১৩-০২-২০২২ তারিখে বনানী থানায় এজাহার দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। উল্লেখ্য, জনাব মোঃ কামাল হোসেন মহাপরিচালক মহোদয়কে মিথ্যা বলে তার সেই জেলখাটা ছোট ভাই (রবিন) যার মামলা অধিদপ্তরই বাদী সেই সত্যতা গোপন করে তাকে (রবিন) ০৭-০৩-২০২৩ তারিখে অত্র অধিদপ্তরাধীন সেতু/কালভার্ট শীর্ষক নির্মাণ প্রকল্পে কার্যসহকারী হিসাবে চাকুরি পাইয়ে দেন। পরবর্তীতে নিয়োগ জালিয়াতি মামলার আসামী রবিন-কে শিক্ষা ভবন, আব্দুল গণি রোড, ঢাকাতে অফিস সহায়ক পদে চাকুরি পাইয়ে দেন। জানা যায় রবিন বর্তমানে মধুপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত আছে।
এই দুর্নীতিবাজ কর্মচারি জনাব কামাল হোসেন, ত্রাণ অনুবিভাগের কম্বল, ঢেউটিন, শুকনা খাবার ও বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছে রেইট কোড ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি মধুপুর, টাঙ্গাইলে কোটি টাকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, দোকান, মার্কেট ও ফিসারিজ ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। এছাড়া ঢাকায় উদয়া ম্যানশন, পূর্বাঞ্চল মেইনরোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। লিংক গার্ডেন, মেরুল বাড্ডা, ঢাকাতে তার স্ত্রীর নামে ১টি ফ্ল্যাট, তার শ্বশুরের নামে ১টি, শ্বাশুড়ির নামে ১টি, বড় বোনের নামে ১টি ও বড় বোনের স্বামীর নামে ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এছাড়াও ঢাকায় নামে-বেনামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট ক্রয় করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
কামাল হোসেনের ভগ্নীপতি মোঃ আশরাফুল ইসলাম ছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এর সহকারি একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্বে পালন করার সূত্রে তিনি তৎকালীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোতে ডাটা এন্টি অপারেটরএবং পরবর্তীতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরে সাঁটলিপিকার হিসেবে চাকুরি নেন। ভগ্নিপতির ক্ষমতা বলে একাধিক চাকুরির সুবিধাসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন।।
জনাব কামাল হোসেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ার সুবাদে মহাপরিচালকের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকজনের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের কাছ থেকে মহাপরিচালকের নাম ভাঙ্গিয়ে বদলি ও বিভিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ সকল অন্যায় ও দুর্নীতি দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন। এত অন্যায় ও অবৈধ/অনৈতিক কাজের প্রমানসহ অভিযোগ থাকার পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
আমাদের প্রতিনিধি তার সাথে যোগাযোগ করার পরিপ্রেক্ষিতে সে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তাকে হুমকি ধামকি দেয়। সে বলে আমি এগুলার তোয়াক্কা করি না আমার নামে কোন কিছু নেই সব আমার আত্মীয় স্বজনের নামে ।
কামাল হোসেন সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। এবং এই ব্যাপারে তিনি কিছুই বলতে নারাজ।